মা-বাবার ও পরিবার-পরিজনের জন্য কুরআনে উল্লেখিত দোয়া
মা-বাবার ও পরিবার-পরিজনের জন্য কুরআনে উল্লেখিত দোয়া
মা বাবার জন্য সন্তানের হৃদয় হয় কোমল ও সহনশীল। এ কারণেই হজরত ইবরাহিম আলাইহি সালামের পিতা আল্লাহর দুশমন হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রথমে তাঁর পিতার জন্য দোয়া করেছিলেন। অতঃপর যখন বুঝতে পারলেন যে, পিতা আল্লাহর দুশমন তখন তিনি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সুরা তাওবায় এ বিষয়টি স্পষ্ট ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর ইবরাহিম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফিরাত কামনা ছিল কেবল সেই প্রতিশ্রুতির কারণে; যা তিনি তার সাথে করেছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর কাছে একথা প্রকাশ পেল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিলেন। নিঃসন্দেহে ইবরাহিম ছিলেন বড় কোমল হৃদয়, সহনশীল।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১১৪)
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন জায়গায় পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার, উত্তম আচরণ এবং দোয়া করার পদ্ধতি ও নির্দেশ প্রদান করেছেন। আর তা হলো-
উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)
অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন; যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-
উচ্চারণ : রাব্বানাগফিরলি ওয়ালে ওয়ালেদাইয়্যা ওয়া লিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়া ক্বুমুল হিসাব। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের জীবিত মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার তাওফিক দান করুন। আর মৃত মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলা তাঁদের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম কবুল করুন। আমিন।
উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৪)
অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! তাদের উভয়ের প্রতি রহম করুন; যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’
উচ্চারণ : রাব্বানাগফিরলি ওয়ালে ওয়ালেদাইয়্যা ওয়া লিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়া ক্বুমুল হিসাব। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
বাবা-মা’র জন্য দোয়া করার পদ্ধতি
সুরা তাওবায় আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সেই কথা উল্লেখ করেন যা তিনি তার পিতার সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর ইবরাহিম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফিরাত কামনা ছিল কেবল সেই প্রতিশ্রুতির কারণে, যা তিনি তার সাথে করেছিলেন। অতপর যখন তাঁর কাছে একথা প্রকাশ পেল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিলেন। নিঃসন্দেহে ইবরাহিম ছিলেন বড় কোমল হৃদয়, সহনশীল।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১১৪)
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম স্বদেশ ত্যাগের সময় তার বাবাকে বলেছিলেন যে, তার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সে দোয়াই আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর শিক্ষার জন্য কুরআনে তুলে ধরেছেন। যাতে তারা তাদের নিজেদের জন্য দোয়া করার পাশাপাশি পিতামাতা ও মুমিনদের জন্য দোয়া করতে পারেন। দোয়াটি হলো-
উচ্চারণ : রাব্বানাগফিরলি ওয়ালে ওয়ালেদাইয়্যা ওয়া লিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়া ক্বুমুল হিসাব। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমাদের পিতামাতাকে ক্ষমা করুন। দুনিয়ার সকল মুমিন মুসলমানকে ক্ষমা করুন। সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের শিক্ষা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
উচ্চারণ : রাব্বানাগফিরলি ওয়ালে ওয়ালেদাইয়্যা ওয়া লিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়া ক্বুমুল হিসাব। (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)
অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমাদের পিতামাতাকে ক্ষমা করুন। দুনিয়ার সকল মুমিন মুসলমানকে ক্ষমা করুন। সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের শিক্ষা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
পরিবার-পরিজনের জন্য দোয়া
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম যখন স্ত্রী-পুত্রকে জনমানবহীন মরুভূমিতে পবিত্র মক্কার পাশে রেখে আসেন তখন তাঁর পরিবার ও এ পবিত্র ভূমির জন্য দোয়া করেছিলেন। দ্বীনে ইলাহির ওপর অটল অবিচল থাকার জন্য সন্তান ও তাঁর নিজের জন্য দোয়া করেছিলেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে জনমানবহীন পবিত্র মক্কায় সুন্দর আবাস গড়ে ওঠে এবং জমজম পানির ব্যবস্থা হয়। সর্বোপরি দ্বীনে ইলাহির প্রচার প্রসার হয়। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সে দোয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন, এলাকার কল্যাণে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থণা করতে পারি।
ক. পবিত্র মক্কা নগরী ও এর মুমিন অধিবাসীদের জন্য হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া-
رَبِّ اجْعَلْ هذَا بَلَداً آمِناً وَ ارْزُقْ أَهْلَهُ مِنَ الثَّمَرَاتِ مَنْ آمَنَ مِنْهُمْ بِاللهِ وَ الْيَوْمِ الْآخِرِ
উচ্চারণ : রাব্বিঝআ`ল হাজা বালাদান আমিনাও ওয়ারযুক্ব আহলাহু মিনাছছামারা-তি মান আমানা মিনহুম বিল্লাহি ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি।
অর্থ- ‘হেপ্রতিপালক! এ শহরকে নিরাপদ করুন, আর এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান কর।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১২৬)
খ. দ্বীনের ওপর স্থির থাকার এবং নিরাপদ নগরীর জন্য দোয়া-
رَبِّ اجْعَلْ هذَا الْبَلَدَ آمِناً وَ اجْنُبْنِيْ وَ بَنِيَّ أَنْ نَعْبُدَ الْأَصْنَامَ رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيْراً مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِيْ فَإِنَّهُ مِنِّيْ وَ مَنْ عَصَانِيْ فَإِنَّكَ غُفُوْرٌ رَحِيْمٌ رَبَّنَا إِنِّيْ أَسْكَنْتُ مِنَ ذُرِّيَّتِيْ بِوَادٍ غَيْرِ ذِيْ زَرْعٍ عِنْدَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيْمُوا الصَّلَاةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَ ارْزُقْهُمْ مِنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُوْنَ
উচ্চারণ- রাব্বিঝআ`ল হাজাল বালাদা আমিনাও ওয়াঝনুবনি ওয়া বানিইয়্যা আন না`বুদাল আচনাম। রাব্বা ইন্নাহুন্না আদলালনা কাছিরাম মিনান নাসি ফামান তাবিআ`নি ফাইন্নাহু মিন্নি ওয়া মান আ`চানি ফাইন্নাকা গাফুরুর রাহিম। রাব্বানা ইন্না আসকানতু মিন জুররিয়্যাতি বিওয়াদিন গাইরি জি যারইন ইংদা বাইনাকাল মুহাররামি রাব্বানা লিইয়ুক্বিমুস সালাতা ফাঝআ`ল আফইদাতাম মিনাননাসি তাহওই ইলাইহিম ওয়ার যুক্বহুম মিনাছছামারাতি লাআ`ল্লাহুম ইয়াশকুরুন।
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! এ নগরীকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে প্রতিমা পূজা থেকে দূরে রাখ। ‘হে আমার প্রতিপালক! এ সব প্রতিমা তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সেই আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেউ আমার অবাধ্য হলে তুমি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় তোমার পবিত্র গৃহের নিকট, হে আমাদের প্রতিপালক! এজন্য যে, তারা যেন সালাত কায়েম করে। অতএব, তুমি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও এবং ফলাদি দ্বারা তাদের রিযিকের ব্যবস্থা কর, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩৫-৩৭)
গ. নিজের জন্য এবং পিতামাতা ও মুমিনদের জন্য ইবরাহীম (আ.)-এর দোয়া
رَبَّنَا اغْفِرْلِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ- রাব্বানাগফিরলি ওয়ারিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমু`মিনিনা ইয়াওমুল হিসাব।
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব অনুষ্ঠিত হবে সেদিন আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।’(সূরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)।
এ আয়াতগুলো হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। বান্দার শিক্ষা ও বাস্তবজীবনে এ দোয়াগুলো দ্বারা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার জন্য। হে আল্লাহ! আপনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে আপনার শিখানো পদ্ধতিতে দোয়ার মাধ্যমে আপনার রহমত বরকত ও কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন।
আমিন।
رَبِّ اجْعَلْ هذَا بَلَداً آمِناً وَ ارْزُقْ أَهْلَهُ مِنَ الثَّمَرَاتِ مَنْ آمَنَ مِنْهُمْ بِاللهِ وَ الْيَوْمِ الْآخِرِ
رَبِّ اجْعَلْ هذَا الْبَلَدَ آمِناً وَ اجْنُبْنِيْ وَ بَنِيَّ أَنْ نَعْبُدَ الْأَصْنَامَ رَبِّ إِنَّهُنَّ أَضْلَلْنَ كَثِيْراً مِنَ النَّاسِ فَمَنْ تَبِعَنِيْ فَإِنَّهُ مِنِّيْ وَ مَنْ عَصَانِيْ فَإِنَّكَ غُفُوْرٌ رَحِيْمٌ رَبَّنَا إِنِّيْ أَسْكَنْتُ مِنَ ذُرِّيَّتِيْ بِوَادٍ غَيْرِ ذِيْ زَرْعٍ عِنْدَ بَيْتِكَ الْمُحَرَّمِ رَبَّنَا لِيُقِيْمُوا الصَّلَاةَ فَاجْعَلْ أَفْئِدَةً مِنَ النَّاسِ تَهْوِي إِلَيْهِمْ وَ ارْزُقْهُمْ مِنَ الثَّمَرَاتِ لَعَلَّهُمْ يَشْكُرُوْنَ
رَبَّنَا اغْفِرْلِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ
উচ্চারণ- রাব্বানাগফিরলি ওয়ারিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমু`মিনিনা ইয়াওমুল হিসাব।
এ আয়াতগুলো হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া যা আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন। বান্দার শিক্ষা ও বাস্তবজীবনে এ দোয়াগুলো দ্বারা আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার জন্য। হে আল্লাহ! আপনি সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে আপনার শিখানো পদ্ধতিতে দোয়ার মাধ্যমে আপনার রহমত বরকত ও কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন।


কোন মন্তব্য নেই