রোজার কতিপয় জরুরি মাসআলা
রোজার কতিপয় জরুরি মাসআলা
যেসব কারণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে
যেসব কারণে রোজা না রাখার অনুমতি আছে
শরয়ী সফর অর্থাৎ ৭৭ কিলোমিটার ভ্রমন করলে। তবে মুসাফিরের জন্য উত্তম হচ্ছে যদি কষ্ট কম হয়, তাহলে রোজা রেখে নেয়া। [সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪; আলহিদায়া : ১/২২১; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২০]
অতিশয় বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে অক্ষম হলে। যে ব্যক্তি বার্ধক্যজনিত কারণে কিংবা কোনো স্থায়ী জটিল রোগের কারণে রোজা রাখতে অক্ষম, ভবিষ্যতেও সুস্থতা লাভের সম্ভাবনা নেই তিনি ফিদিয়া (প্রতি রোজার জন্য পৌঁনে দুই সের গম বা তার মূল্য) আদায় করবেন। কিন্তু যদি পরবর্তীকালে কখনো সুস্থ হয়ে যান, তাহলে এ রোজাগুলোর কাজা করে নেয়া জরুরি। [রদ্দুল মুহতার :২/৪২৭; আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/১৯১; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৬২; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/১২০]
রোজা রাখার কারণে কোনো জটিল রোগ সৃষ্টি বা পুরাতন রোগ বৃদ্ধির প্রবল ধারণা হলে, তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে। সুস্থ হওয়ার পর কাজা করে নেবেন। [সুরা বাকারা : ১৮৪; আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৭; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৬২]
গর্ভবতী মহিলা নিজের বা গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির পূর্ণ আশংকা বোধ করলে তিনি রোজা না রেখে পরবর্তী কোনো সময়ে কাজা করে নেবেন। অনুরূপ রোজার কারণে দুগ্ধপোষ্য সন্তানের ক্ষতির পূর্ণ আশংকা বোধ করলে তিনিও রোজা রাখবেন না। [রদ্দুল মুহতার : ২/৪২২; আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৭; আলহিদায়া : ১/২২২; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৬৭]
যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয়
-এমন বস্তু গিলে ফেললে, যা সাধারণত খাদ্য বা ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় না। যেমনÑ কংকর, পাথর, কাগজ, আঁটি ইত্যাদি। [আলবাহরুর রায়েক : ২/২৯৫; আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ২/২০২; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৬: জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৩]
-কুলি করার সময় কণ্ঠনালীতে পানি ঢুকে গেলে। [আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০২; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৪; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৩]
-কানে তেল, ঔষধ বা পানি প্রবেশ করালে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৬; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৪; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৯]
-নাকের ড্রপ ব্যবহার করলে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৬; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৪; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৯]
-নাকের ড্রপ ব্যবহার করলে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৬; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৪; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৯]
-কাউকে আঘাত করার বা অন্য কোনো রকম ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক পানাহার করালে। [আলহিদায়া ; ১/২১৭; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৩]
-ধূমপান করলে বা ইচ্ছাকৃত লোবান-আগরবাতি ইত্যাদির ধোঁয়া গ্রহণ করলে। [আলহিদায়া ; ১/২১৮; রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৫; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ২০৩]
-ডুশ গ্রহণ করলে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া :১/২০৪; আলহিদায়া : ১/২২০; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৪]
-ডুশ গ্রহণ করলে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া :১/২০৪; আলহিদায়া : ১/২২০; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৪]
-ইনহেলার ব্যবহার করলে । [রদ্দুর মুহতার : ২/৩৯৫; আল ফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৩; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৭]
-ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে [আলহিদায়া : ১/২১৮; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৬০]
-যোনী পথের ভেতর কোন ঔষধ ব্যবহার করলে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৪; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৪; ফাতাওয়া রহিমিয়া : ৭/২৫৭; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৪]
যে সকল কারণে রোজা মাকরূহ হয়
-বিনা প্রয়োজনে কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করলে বা চাবালে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/১৯৯; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৮; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২২]
-বিনা প্রয়োজনে কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করলে বা চাবালে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/১৯৯; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৮; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২২]
-ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুথু জমা করে তা গিলে ফেললে। [আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/১৯৯; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৯]
-স্ত্রীকে চুম্বন করলে বা জড়িয়ে ধরলে (যদি বীর্যপাতের সম্ভাবনা থাকে)। [আলহিদায়া : ১/২১৭; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০১; আলজাওহারাতুন নাইয়্যারাহ : ১/১৭০]
-টুথপেস্ট ও টুথপাউডার ব্যবহার করলে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৪০০; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৮২; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৮]
যে সকল কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না
যে সকল কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না
-ভুলক্রমে পানাহার কিংবা সহবাস করলে। [আলহিদায়া : ১/২১৬; আদ্দুররুল মুখতার : ৪৩৩]
-অনিচ্ছায় মশা-মাছি, ধূলিকণা, ধোঁয়া কণ্ঠনালীতে ঢুকে গেলে। [রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৫; আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া : ১/২০৩]
-চোখে সুরমা ও ড্রপ ব্যবহার করলে। [রদ্দুল মুহতার : ৭/৩৭৯৫; ফাতহুল কাদির : ৪/৩২৭; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৬]
-কোনো ধরনের ইঞ্জেকশান-ইনসুলিন বা টিকা নিলে রোজা ভঙ্গ হয় না, এমনকি গ্লুকোজ ইঞ্জেকশানের দ্বারাও রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। [ফাতাওয়া উসমানী : ২/১৮৬; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৭; ফাতাওয়া রহিমিয়া : ৭/২৫৭; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল : ৪/৫৭৮]
-কানে পানি প্রবেশ করলে। [জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৫]
-রোগাক্রান্ত ব্যক্তি অক্সিজেন গ্রহণ করলে। [ফাতাওয়া উসমানী : ২/১৮০]
-রক্ত দিলে বা নিলে। [রদ্দুল মুহতার :৭/৩৯৫; ফাতহুল কাদির : ৪/৩২৭]
-আতর, গোলাপ ইত্যাদির ঘ্রাণ নিলে। [রদ্দুল মুহতার : ৭/৪৭৪; মারকিউল ফালাহ : ১/২৪৬]
-রোগাক্রান্ত ব্যক্তি অক্সিজেন গ্রহণ করলে। [ফাতাওয়া উসমানী : ২/১৮০]
-রক্ত দিলে বা নিলে। [রদ্দুল মুহতার :৭/৩৯৫; ফাতহুল কাদির : ৪/৩২৭]
-আতর, গোলাপ ইত্যাদির ঘ্রাণ নিলে। [রদ্দুল মুহতার : ৭/৪৭৪; মারকিউল ফালাহ : ১/২৪৬]
-রোজা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে। [আলহিদায়া : ১/২১৭; আলজাওয়াহিরুল ফাতাওয়া : ১/২৫]
রমজান মাসে ফজর ও মাগরিবের জামাত
রমজান মাসে মাগরিবের আযানের পর জামাতের পূর্বে এ পরিমাণ সময় বিলম্বিত করবে, যাতে রোজাদারগণ ধীরস্থীরভাবে ইফতার সেরে জামাতে শরিক হতে পারেন। রমজান মাসে ফজরের নামায প্রথম ওয়াক্তে পড়ে নেয়ায় কোনো অসুবিধা নেই, কেননা তখন বেশি মানুষ জামাতে হাজির হয়। পরবর্তীতে মানুষ সাধারণত ঘুমিয়ে পড়ে, ফলে অনেক ক্ষেত্রে ফজরের জামাত এমনকি নামাজই ছুটে যাবার আশংকা থাকে। [ফাতাওয়া রহিমিয়া : ৭/২৪৩; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ১৩/১৩৪]
কোন মন্তব্য নেই