কেন আল্লাহ মানুষ কে এত কষ্ট দেয়??????????




দুঃক্ষ, কষ্ট, দারিদ্রতা. মন থেকে চাইলাম তবু ও পেলামনা. পৃথিবীটা এমন কেন বানালো আল্লাহ? কেন আল্লাহ মানুষ কে এত কষ্ট দেয়. এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে আমরা বড় হলাম কিন্তু তবু ও এর উত্তর বুঝলামনা. এর উত্কৃষ্ট উত্তরটি কোরান এ দেয়া হয়েছে অনেক বার. আমরা বুঝার চেষ্টা করিনা বলে বুঝিনা.
যখনি আমরা কষ্টের মধ্যে পরি তখন ভুলে যাই যে মানুষ এবং আল্লাহ ছাড়া ও শয়তান এর অস্তিত্ব আছে. যে কিনা এতটাই চালক, বুদ্ধিমান, এবং ধূর্ত যে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে ছাড়বেনা যতক্ষণ না আপনি আল্লাহ কে ভুল বুঝে না বসেন. অনেক কষ্টে পড়লে আমরা ভুলে যাই যে এটা শয়তান এর একটা অসাধারণ প্লান হতে পারে. শয়তান কি ভাবে কাজ করে, প্লান তৈরী করে এবং কতটা ধৈর্যশীল সে সেটা কি আমরা জানি?
বিপদ যখন আসে তখন আমরা বলি আল্লাহ কেন এটা দিল মানুষকে. ধরুন মানুষ যদি বিপদ এ না পরত তাহলে কি ভাবে আপনি প্রমান করবেন মানুষ হিসেবে আপনি উদার? সাহায্যকারী এবং সত. সুধু মাত্র আচরণ দিয়ে? সেটা যে অভিনয় নয় কি ভাবে প্রমান করবেন?
এমন একটা পৃথিবী যদি হত যেখানে কষ্ট বলতে কিছু নেই. তাহলে সেই পৃথিবী দিয়ে আপনি কি করতেন? ধরুন সেই পৃথিবীর সবাই স্বয়ংসম্পূর্ণ. কারো কোনো অভাব নেই. মানুষ কে উপকার করার যে আনন্দ. মায়ের চোখে জল এর আবেগ,অসহায় মানুষকে ভালবাসা, ক্ষুধার্থ কে খাদ্য দেয়া আর দুর্যোগের সাথী হবার যে মুল্য সেটা কি ভাবে দিতেন? আর এমন পৃথিবীর থাকার কি কোনো যুক্তি আছে যেখানে মানুষ সুধু আরামে থাকবে? তাহলে পৃথিবী তৈরী হবার এ বা দরকার কি. আর যে কষ্টটা আমরা দেখি হতে পারে এটা তার জন্য একটা পরীক্ষা. হতে পারে পরকাল তার অনেক আনন্দের হবে. হতে পারে আমাদের জন্য একটা শিক্ষা.
আসলে আমরা যখন বিপদএ পরি তখন আমাদের চিন্তা চেতনায় অসামাঞ্জস্যতা চলে আসে. সাভাবিক চিন্তা নষ্ট হয়ে যায়. কখনো আমরা এভাবে ভাবিনা যে কে আমার চেয়ে খারাপ আছে, বরং আমি কেন খারাপ আছি অথবা সবাই কেন সুখে আছে যখন আমার এত কষ্ট. দেখা গেল কারো সম্পর্ক ভেঙ্গে গেল মনে হবে তার দুনিয়াটাই শেষ. অথচ কারো হয়ত বিনা অপরাধে মরতে হচ্ছে, জেলএ পচতে হচ্ছে কিংবা একফোটা খাবার পানি পর্যন্ত নেই. অনেক বিপদ থেক বের হয়ে আসার পর আমরা হাফ ছেড়ে বাচি. কিন্তু যারা বিপদ নিয়ে এ বড় হচ্ছে তাদের পাশে ক জন এ দাড়াই. কেউ হয়ত আজীবন নামাজ পরে যা চাইল পেলনা কিন্তু সে তবু ও আল্লাহ এর উপর সন্তুষ্ঠ. কারণ সে যে জানে আল্লাহ তাকে ঠিক পুরস্কার ই দিবেন. কেও হয়তো এক বছর নামাজ রোজা করে যখন কিছু পায়না বিরক্ত হয়ে সব ছেড়ে দেয়. তাদের যুক্তি আল্লাহ কিছু দেয়না নামাজ পরে কি লাভ. আমরা ভাবিনা যে আমাদের বুঝার সীমাবদ্ধতা আছে. মানুষকে সীমাহীন ক্ষমতা দিয়ে পাঠানো হয়নি যে সে সব বুঝে বিচার করে ফেলবে. কিন্তু তবু ও আমরা বুঝতে চাই. না বুঝে যখন উত্তর না পাই তখন এ ভুল পথে পা বারাই. যে ফাদ টা অনেক আগেই শয়তান পেতে রাখে.অসাধারণ একটা শিক্ষা আমরা পেতে পারি কোরান এর ১৮:৬৪-82 থেকে থেকে. আমরা জানি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ নবীদের মধ্যে মুসা [আলায়হে ওয়াসাল্লাম] একজন. তার ও সব বুঝার ক্ষমতা আল্লাহ দেয়নি. বরং তিনি একজন জন এর কাছে ধৈর্যশীলতা শিখেছিলেন. যেটা ছিল আল্লাহ এর কাছ থেকে একটি পরীক্ষা:

64
মূসা বললেনঃ আমরা তো এ স্থানটিই খুঁজছিলাম। অতঃপর তাঁরা নিজেদের চিহ্ন ধরে ফিরে চললেন।
65
অতঃপর তাঁরা আমার বান্দাদের মধ্যে এমন একজনের সাক্ষাত পেলেন, যাকে আমি আমার পক্ষ থেকে রহমত দান করেছিলাম ও আমার পক্ষ থেকে দিয়েছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান।
66
মূসা তাঁকে বললেনঃ আমি কি এ শর্তে আপনার অনুসরণ করতে পারি যে, সত্যপথের যে জ্ঞান আপনাকে শেখানো হয়েছে, তা থেকে আমাকে কিছু শিক্ষা দেবেন?
67
তিনি বললেনঃ আপনি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্য্যধারণ করে থাকতে পারবেন না।
68
যে বিষয় বোঝা আপনার আয়ত্তাধীন নয়, তা দেখে আপনি ধৈর্য্যধারণ করবেন কেমন করে?
69
মূসা বললেনঃ আল্লাহ চাহেন তো আপনি আমাকে ধৈর্য্যশীল পাবেন এবং আমি আপনার কোন আদেশ অমান্য করব না।
70
তিনি বললেনঃ যদি আপনি আমার অনুসরণ করেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না, যে পর্যন্ত না আমি নিজেই সে সম্পর্কে আপনাকে কিছু বলি।
71
অতঃপর তারা চলতে লাগলঃ অবশেষে যখন তারা নৌকায় আরোহণ করল, তখন তিনি তাতে ছিদ্র করে দিলেন। মূসা বললেনঃ আপনি কি এর আরোহীদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্যে এতে ছিদ্র করে দিলেন? নিশ্চয়ই আপনি একটি গুরুতর মন্দ কাজ করলেন। ا
72
তিনি বললেনঃ আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্য্য ধরতে পারবেন না ?
73
মূসা বললেনঃ আমাকে আমার ভুলের জন্যে অপরাধী করবেন না এবং আমার কাজে আমার উপর কঠোরতা আরোপ করবেন না।
74
অতঃপর তারা চলতে লাগল। অবশেষে যখন একটি বালকের সাক্ষাত পেলেন, তখন তিনি তাকে হত্যা করলেন। মূসা বললেন? আপনি কি একটি নিস্পাপ জীবন শেষ করে দিলেন প্রাণের বিনিময় ছাড়াই? নিশ্চয়ই আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন।
75
তিনি বললেনঃ আমি কি বলিনি যে, আপনি আমার সাথে ধৈর্য্য ধরে থাকতে পারবেন না।
76
মূসা বললেনঃ এরপর যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে আপনি আমাকে সাথে রাখবেন না। আপনি আমার পক্ষ থেকে অভিযোগ মুক্ত হয়ে গেছেন।
77
অতঃপর তারা চলতে লাগল, অবশেষে যখন একটি জনপদের অধিবাসীদের কাছে পৌছে তাদের কাছে খাবার চাইল, তখন তারা তাদের অতিথেয়তা করতে অস্বীকার করল। অতঃপর তারা সেখানে একটি পতনোম্মুখ প্রাচীর দেখতে পেলেন, সেটি তিনি সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিলেন। মূসা বললেনঃ আপনি ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে এর পারিশ্রমিক আদায় করতে পারতেন।
78
তিনি বললেনঃ এখানেই আমার ও আপনার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল। এখন যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য্য ধরতে পারেননি, আমি তার তাৎপর্য বলে দিচ্ছি।
79
নৌকাটির ব্যাপারে-সেটি ছিল কয়েকজন দরিদ্র ব্যক্তির। তারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষন করত। আমি ইচ্ছা করলাম যে, সেটিকে ক্রটিযুক্ত করে দেই। তাদের অপরদিকে ছিল এক বাদশাহ। সে বলপ্রয়োগে প্রত্যেকটি নৌকা ছিনিয়ে নিত।
80
বালকটির ব্যাপার তার পিতা-মাতা ছিল ঈমানদার। আমি আশঙ্কা করলাম যে, সে অবাধ্যতা ও কুফর দ্বারা তাদেরকে প্রভাবিত করবে।
81
অতঃপর আমি ইচ্ছা করলাম যে, তাদের পালনকর্তা তাদেরকে মহত্তর, তার চাইতে পবিত্রতায় ও ভালবাসায় ঘনিষ্ঠতর একটি শ্রেষ্ঠ সন্তান দান করুক।
82
প্রাচীরের ব্যাপার-সেটি ছিল নগরের দুজন পিতৃহীন বালকের। এর নীচে ছিল তাদের গুপ্তধন এবং তাদের পিতা ছিল সৎকর্ম পরায়ন। সুতরাং আপনার পালনকর্তা দায়বশতঃ ইচ্ছা করলেন যে, তারা যৌবনে পদার্পন করুক এবং নিজেদের গুপ্তধন উদ্ধার করুক। আমি নিজ মতে এটা করিনি। আপনি যে বিষয়ে ধৈর্য্যধারণ করতে অক্ষম হয়েছিলেন, এই হল তার ব্যাখ্যা। “
তাহলে দেখুন প্রচন্ড কষ্ট, দুঃক্ষ বা ধৈর্য আমাদের জীবনের একটা অংশ যেটা আমরা সবসময় বুঝবনা. তাই বরং আমাদের কষ্টের সময় ধর্য ধরা উচিত. কষ্ট থেকে বের হতে চেষ্টা করা উচিত. সব চেয়ে বড় আল্লাহ এর উপর ভরসা রাখি. প্রার্থনা যেন এমন না হয় যে যদি আমি এটা করি তাহলে আমাকে ওটা দিতে হবে. বরং সুধু আল্লাহ এর সন্তুষ্টির জন্য. মজার ব্যাপার হলো আমাদের প্রাথনা হলো আল্লাহ এটা দাও, ওটা দাও. আমরা বলিনা আল্লাহ আমার যেটা ভালো হয় সেটা আমাকে দাও আর খারাপ দুরে সরিয়ে দাও. আমার প্রাথনা যেন তোমাকে খুশি করতে হয়. আমরা জানি বিচার বুদ্ধি দিয়ে সব বুঝার সময় আমরা পৃথিবীকেই মুল্য দেই বেশি. পরকাল কে ভুলে যাই. কিন্তু আল্লাহ ঠিক ই পরকালে আমাদের উপযুক্ত পুরস্কার ই দিবেন. তাই কষ্ঠের সময় আমাদের আল্লাহ এর উপর ভরসা রাখা উচিত. আর একটা বিষয় মনে রাখা উচিত কোরান এ অসাধারণ অনেক কিছু আছে আমাদের উচিত কোরান কে বুঝা. তাহলে আমরা ইনশা আল্লাহ অনেক কিছু বুঝতে শিখব.

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.